আজ কম্পিউটার আর মোবাইলের দৌলতে গুগোল ইমপোর্ট কিবোর্ড ব্যবহার করে আমরা সহজেই লিখে ফেলতে পারি বাংলা। বাংলায় টাইপ করাটা আজকে জলের মতো সোজা। কিন্তু আমরা কি জানি, কে প্রথম বাংলা অক্ষরের বিন্যাস করেছিলেন?
সত্যি এটা একটা বড় প্রশ্ন। ছাপাখানার আদিপর্বে কে প্রথম বাংলা অক্ষর সাজিয়েছিলেন প্রথাগতভাবে?
বলা হয়, 4 কিলোমিটার অন্তর অন্তর ভাষার তফাৎ হয়। এখন গ্লোবালাইজেশনের যুগ। সারা পৃথিবী হাতের মুঠোয়। কিন্তু একটা সময় তা ছিল না। বাংলার এক প্রান্তের মানুষের অন্য প্রান্তের মানুষের সাথে যোগাযোগ করা ছিল বেশ কঠিন এবং কষ্টসাধ্য বিষয়। বলাবাহুল্য সেই সময় বাংলার লিখিত অক্ষর এক এক স্থানে একেক রকম ছিল। মূলত পুঁথির পাতার ওপর খগের কলম দিয়ে সংগ্রহ করে রাখা হত মূল্যবান তথ্য।
এ কথা 100% সত্যি যে ইংরেজদের হাত ধরেই বাংলা ছাপাখানার জন্ম। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বিশিষ্ট কর্মচারী উইলকিন্স সাহেবের হাত ধরে প্রথম বাংলা ছাপা অক্ষরের নকশা নির্মাণ করা হয়। হুগলি জেলার চুঁচুড়া শহর, সাল ১৭৭৮; প্রথম জন্মগ্রহণ করে বাংলা ছাপাখানা। সেই ছাপাখানাতেই প্রথম নকশা করা হয় বাংলা অক্ষরের। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির উচ্চপদস্থ কর্মচারী এই উইলকিনসন সাহেবের সহকারী ছিলেন পঞ্চানন কর্মকার। পরবর্তীকালে পঞ্চানন কর্মকার মহাশয় বাংলা অক্ষরকে আরো মার্জিত করে উন্নত মানের বাংলা ছাপা অক্ষরের নকশা তৈরি করেন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ করা প্রয়োজন তখন কাঠে খোদাই করে ছাপার উপযুক্ত ব্লক তৈরি করা হতো। সেই ব্লকে কালি মাখিয়ে কাগজের উপর ছাপানো হত বই।
উইলকিনসন সাহেবের পরবর্তীকালে পঞ্চানন কর্মকার নিজের উদ্যোগে বাংলা অক্ষরের ছাপার ব্লককে আরো মার্জিত এবং উন্নত মানের তৈরি করেন। পঞ্চানন কর্মকার ছিলেন বাঙ্গালীদের মধ্যে প্রথম ব্যক্তি যিনি বাংলা টাইপ খোদাই করার কাজ জানতেন।
পরবর্তীকালে সুরেশ চন্দ্র মজুমদার মহাশয় বাংলা ছাপার অক্ষর কে আরো উন্নত মান দেন। তিনি প্রথম লাইনোটাইপ বাংলা অক্ষর তৈরি করেন। এর পরবর্তীকালে তিনি মনোটাইপ, ইস্টার্ন টাইপ এবং তারও পরবর্তীকালে বাংলা টাইপ রাইটারের অক্ষরের বিন্যাস এবং নকশা প্রস্তুত করেছিলেন।
Tags:
বিবিধ